সাজানো গোছান একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আপনি বের হলেন বেশ আয়েশ করে ভুরিভোজ করে। হয়ত সেখানে ছিল মোম বাতির রোমান্টিক আলো অথবা লাল-নীল-সবুজ বাতির ভিন্ন একটি আবহ। থরে থরে সাজানো রয়েছে দেশ বিদেশের নানা খাবার। কিন্তু বের হতেই দেখবেন একদল ক্ষুদার্ত শিশু আপনার দিকে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। বুকের হাড়গুলো গোণা যাচ্ছে। কেওবা আবার ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে নিচ্ছে। হয়ত আরও একটি অভুক্ত দিনের অপেক্ষায়।
আমাদের কজনইবা ভাবে এই অসহায় বাচ্চাগুলোর কথা? আমরা কজনইবা তুলে দিতে যাই ওদের মুখে এক মুঠো খাবার?
অন্যদিকে বিয়ে বাড়ি বা রেস্টুরেন্টে প্রায় প্রতিদিনই অনেক খাবার বেচে যায়। খাবারগুলো সাধারণত চলে যায় ডাস্টবিনে। প্রতিদিন এরকম প্রচুর খাবার নস্ট হয়।
আর এ দুটি বিষয় নিয়ে কিছু একটা করার চিন্তা করছিলেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্লগার আরিফ আর হোসাইন। যদি কোনভাবে এ অতিরিক্ত খাবারগুলো ঐ সকল অসহায় ক্ষুদার্ত মানুষগুলোর কাছে একটু যদি পৌঁছানো যেত, তাহলে ওদের একটু হলেও উপকার হয়। কিন্তু কে পৌঁছাবে?
তিনি কথা বললেন প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন এর সঙ্গে। কেননা এ ফাউন্ডেশনের রয়েছে প্রায় ৮ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন তার এ ভাবনাকে স্বাগত জানিয়ে সাথে সাথেই রাজি হয়ে যায়। এর পর তারা তৈরি করেন এ ফুড ব্যাঙ্কিং। তারা নিজেরা এ খাবার সংগ্রহ করেন এবং পৌঁছে দিয়ে আসেন ঐ অসহায় মানুষগুলোর মাঝে।
২০১৬ সালের ১৯ মে তাদের এ যাত্রা শুরু হয়। প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের প্রায় ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবী এ ফুডব্যাঙ্কের সাথে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত তারা প্রায় ৪৫০০ জন এর কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। শুধু মাত্র তাদের ফোন করলেই তাদের সদস্যরা চলে আসবে আপনার দরজায়। খাবারগুলো সংগ্রহ করে তারাই বাকি কাজটুকু করে দেবে। আপনার শুধু কাজ +8801842002023 এই নাম্বারটিতে একটি ফোন দিয়ে তাদের জানিয়ে দেয়া। তারপর তারা পৌঁছে যাবে কমলাপুর রেল স্টেশনে, এয়ারপোর্ট রেল স্টেশনে, তেজগাঁও বস্তিতে, মিরপুর, বনানী অথবা অন্য যে কোন জায়গায়, যেখানে একজন মানুষ তাকিয়ে রয়েছে আপনার দিকে।
–যুবাইর বিন ইকবাল, প্রেস বাংলাদেশ